খুলনার দাকোপ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে সোনালি ধানের সমারোহ। রোদ আর হিমেল বাতাসে ফসলের মাঠে মাঠে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন ধানের শীষ। দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ, সবুজ বর্ণ থেকে হলুদ বর্ণ ধারণ করার অপেক্ষায়। আর মাত্র ক’দিনের মধ্যেই কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তোলার উপযোগী হবে।
কৃষকরা জানান, পাকাধান ঘরে উঠবে আর কয়েক দিনের মধ্যে। শুরু হবে নবান্নের উৎসব। পাকা ধান থেকে চাল তৈরি করে পিঠাপুলি পায়েস তৈরি করার জন্যও তারা প্রস্তুত। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা কাঙ্খিত ফলন পাবে।
উপজেলায় এ বছর ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। বর্ষা ঋতুতে এ বছর বর্ষা বেশী হওয়ায় ফসলের মাঠে সবুজ আর সোনালী ধানের হাসি যেন কৃষকদের মনে আনন্দ বয়ে আনছে।
উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মাঠে মাঠে মৃদু মৃদু বাতাসে দোল খাচ্ছে কাঁচা পাকা ধানের শীষ। স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে ১৯ হাজার ৩৬০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ২৩০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার থেকে এ বছর ধান চাষ বেশী হয়েছে।
এছাড়া কৃষি অফিস থেকে কৃষকদেরকে বিনামূল্যে উন্নত মানের বীজ ও সার, কীটনাশক সহায়তা ও সুবিধা এবং কৃষি অফিসার নিজে মাঠকর্মীদের সাথে মাঠে গিয়ে প্রতিনিয়ত পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষকদের।
চুনকুড়ি উওর পাড়া গ্রামের কৃষক অপূর্ব সরদার জনান, আমাদের মাঠে কিছু জমির ধান ফুলে সোনালী বর্ণ ধারণ করেছে, আবার কিছু জমির ধান কেবল ফুলছে। তবে আর মাত্র কদিন পরেই মাঠের অধিকাংশ ধান পাকতে শুরু করবে।
কৃষক সঞ্জয় মন্ডল বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শে এবার ধানের ফলন ভালো হবে আশা করছি। সারা বছরের সব কষ্ট ভুলে যায়, এই ধানের শীষ দেখে।
সরোজমিনে মাঠ ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার সব এলাকার মাঠ গুলোতে একই চিত্র। কৃষকেরা আমন ধানের শীষ পরিচর্চায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। পোকা-মাকড় থেকে ধানকে রক্ষা করায় তাদের মূল লক্ষ্য। আর কয়দিন পরেই কৃষক ধান কাটবে এবং বাম্পার ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, ১৯ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ২৩০ হেক্টর। এবছর আমনের চাষ বেশী হয়েছে। প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন চাউল উৎপাদন হবে। এখনো পর্যন্ত কৃষকদের ধান ভালো পর্যায়ে আছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা কাঙ্কিত ফলন পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কাজেই কৃষক সঠিক সময় ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছি।
খুলনা গেজেট/এনএম